Friday, April 17, 2015

ভুতের গল্প - ১৮

 আমি ঢাকা নর্থ
সাওথ ইউনিভার্সিটি তে বি বি এ এর
একজন ছাত্র । বাড়ি টাঙ্গাইল এ ।
নিকুঞ্জতে থাকতাম । ২ মাস
আগে আমার কাকাতো ভাইয়ের বিয়ের
অনুষ্ঠান ছিল । তাই বিয়ের ৪ দিন আগেই
যাওয়ার প্রস্তুতি নিলাম । উত্তেজনায়
সকালেরখাবার না খেয়েই এয়ারপোর্ট
স্টেশনে গিয়ে বসে রইলাম । আমার
ট্রেন ভ্রমন ছিলছোট বেলার বদভ্যাস ।
যদিও আজ পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকবার
সিট পেয়েছি । তবুও খুব ভালো লাগে ।
ট্রেন ১১ টায় । সাড়ে ১১ টায় ট্রেন আসল
। যখন জয়দেবপুর স্টেশনে পউছুলাম তখন প্রচুর
ক্ষুদা লাগল । টিকেট কাটিনি তাই
বিনা দ্বিদায় ঐ ট্রেন বাদ দিয়ে এক
হোটেলে গিয়ে নিজের খেদমত
করেতে লাগলাম । ট্রেন চলে গেল । আর
ঐ খানেইছিল আমার বোকামি । আবার
বিকাল ৪ টার টড়েন ছিল কিন্তু ঐ ট্রেন
কোন এক কারনে রাত ১২ টায় এসেছিল ।
মাথাটা ছিল খুব গরম । যদিও
বাসে যেতাম কিন্তু আমার জিদ
চেপেছিল যে আমি ট্রেনেই যাবো ।
যে বগিতে উঠেছিলাম সেই
বগিতে মাত্র তিন জন মানুষ ছিল যার
মধ্যে এক জন আমার প্রায় সমবয়সী এক
নারী । । আমার ডান
এবং বামে কেউছিলনা শুধু সামনের
সিটে ছিল ঐ মেয়ে । মেয়ের পাশেও
কেউ ছিলনা । বাকি দুই জনছিল
একে বারে কোনায় ।
আমি মেয়েটাকে দেখছিলাম ।
চেহারা অনেক সুন্দর । তার
চোখজোড়া আমাকে আকর্ষন করছি্ল ।
কথা বলার লোভ
সামলাতে পারলামনা ।
জিজ্ঞাসা করলাম কাপা গলায় .....
--- আপনি কোথায় থাকেন ?
সে জবাব দিলনা । এক মনে চেয়েছিল
জানালার দিকে । আমি ভাবলাম হয়ত
মেয়েটির একাকিত্তের সুযোগ
নিয়েছি তাই চুপ করে রইলাম আর প্রশ্ন
করলামনা । অবশষে একটু পর
মেয়েটি জানালার দিকে চেয়েই
বলতে লাগল ......
আমি রাজশাহি থাকি । বেশ কিছু বছর
আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবসথায়
টাঙ্গাইল এর এক ছেলের সাথে প্রেম হয়
। খুবই ভালো দিন কাটাচ্ছিলাম । এক
রাত্রেঠিক এই টাইমে দুইজন ট্রেন এ
আসছিলাম । ও ছিল খুব সাহসী প্রকৃতির ।
ট্রেন এ সিট ছিল কিনতু ও সবসময়
সিড়িতে বসে আসতো ।ঐ দিন ও তাই
করছিল । তাও দুই হাত দিয়ে দরজার দুই
পাশধরে অনেকটা সামনের
দিকে জুলে । হঠাত দেখি ও নেই আমিও
ঝাপ দিলাম ।
এগুলো বলেই মেয়েটি কেদে ফেলল ।
আমি তো অবাক হলাম । কারন এইটূকু
কাহিনী আমি জানতেও চাইনি তবুও এই
মেয়ের বলার কারন ? মেয়েটির
দিকে ভালোভাবে খেয়াল করলাম ওর
চোখের নিচে কালো আগ
হয়তো টেনসনে এই অবস্থা ।
বঝতে পারলাম
যে মেয়েটা হয়তো আঘাত
পেয়ে কিছুটা মেন্টালি সমস্যয়
ভুগচতেছে । কিন্তু এই মেয়েকে এখন কেন
বাসার বাইরে আসতে হয় , এর
কি পরিবার নেই ।
একটু পর স্টেশনে পউছু্লাম ।
নেমে পকেটথেকে এক সিগারেট বের
করেধরালাম । ট্রেন ছাড়লো । ট্রেনের
দিকে এক দষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম ।
আর ভাবলাম ঐ মেয়েটির কথা । খারাপ
লাগল । হঠাত পেছন থেকে এক মেয়ের
স্বর -" ভাইয়া ? " । আমি চমকে পেছন
দিকে তাকিয়ে ভূত দেখার মত ভয়
পেলাম । আরে এ তো ঐ মেয়ে !!!!!
আমি সিগারেট
টা ফেলে দিয়ে বললাম --
--আ আ আপনি ?
--- আজ আর বাসায় যাবোনা ।
--কেন ?
--- (কাপা গলায় )ঐ জায়গায় যাবো ?
যে খানে ও আছে ।
---( কিছুটা রেগে বললাম ) দেখুন
মাথা খারাপ ?
---না প্লিজ ভাইয়া । (কাদো কাদো) ওর
মৃত্যুর পর আজ পর্যন্ত ঐ জায়গায়
যাইনি ভয়ে প্লিজ আপনাকে আমার
বিশ্বস্ত মনে হয়েছে । প্লিজ...... (বলেই
কেদে ফেলল )
আমি বরাবরই একটু নরম স্বভাবের । কিছুক্ষন
ভেবে দেখলাম । তবুও রাত দেড়টা ।
বুঝতে পাছিলাম্না । শেষমেশ বল্লাম --
---আচ্ছা কই চলুন ।
মেয়েটি আমাকে স্টেশনের দকষিন
দিকে নিয়ে চল্ল । কিছুক্ষন পড় রেল
লাইন এর পথ যাবার পর অন্ধকার আচ্ছন্য
জায়গায় হাটতে লাগলাম ।
হাল্কা বাতাসছিল চারোদিকে । মেঘ
করেছিল পশ্চিমে ।
মেয়েটি কোনো কথা বলছিলনা । একটু
পর থামল । আমি বললাম--
--- কি হল ?
মেয়েটি সামনের অনধকারে হাতের
আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বল্ল
--ঐ যে দখেন ।
আমি তো ভয়ে চুপসে গেলাম । আর
আমি ভীতু স্বভাবেরও আমারখেয়ালই
ছিলনা যে ছেলেটির মরার
স্থানে এসেছি ।
---কি ?
--- ও । আমাকে ডাকছে ।
আমি ওকে স্বান্তনা দেয়ার জন্য ওর
কধে হাত রাখলাম । আর তাতে আমার
শরীর হিম হয়ে গেল । কেননা ওর শরীর
বরফের মত ঠান্ডা ছিল । এবার আমার
কাছে সবকিছু গরবর মনে হল । কিন্তু
আশে পাশের কিছুও দখা যাচ্ছেনা ।
দোউড় দেব কোথায় ভেবে পাচ্ছিনা ।
হঠাত মেয়েটি আমাকে চিতকার
করে বলল । " কি দেখতে পাচ্ছেন
না ওকে ? "
ওর কন্ঠটা এমন শোনালো যে যেন কয়জন
মেয়ে একত্রেঐ কথাটা বলল । তখন ওর
ইশারার দিকে তাকালাম । আর
যা দখলাম তার জন্য আমি একদম
প্রস্তুতছিলামনা । কেননা ভূত
আলাদা জিনিস কিন্তু আমি দেখলাম
একছেলেকে যেটা আমি ছিলাম ।
ছেলেটি নিষ্পলক
তাকিয়ে আছে মেয়ের দিকে । এবার
মেয়ে্টি এবার অদ্ভুত
ভাবে হেসে উঠে ছেলেটির
দিকে ছুটল । এবং দুইজনেই যেন
বাতাসে মিলিয়ে গেল । আমি দোউর
দিব কিন্তু পা নড়াতে পারলামনা ।
এমনকি শরীরও । আর পারলামনা । সেন্স
হাড়ালাম ।
চোখ খুলার পর দেখলাম আমি এক রুমে ।
আমার পাশে এক ২৫-২৬ বয়সের
মহিলা বসে আছে ।
আমি জিজ্ঞাসা করলে সে বর্ননা করল
--
আমি যে জায়গায় পড়েছিলাম ওই
খানেই নাকি তার এক
ভাতিজা ট্রেনের
থেকে পড়ে গিয়ে গাছের সথে মাথায়
আঘাত পেয়ে ঐখানেই মারা যায় আর
ওইখানে নাকি গাছের ডালের
সথে ওড়না পেচিয়ে এক
মেয়ে আত্নহত্যা করেছিল ।
আমি ওছেলের
কোনো ছবি আছে নাকি জিজ্ঞাসা করলাম
। সে মোবাইলে দেখা্লো ।
ছেলেটি ঠীক আমার মতো দেখতে । ওই
বাসায় থেকে বেড়িয়েই চোখ
পড়লো সে রেল লাইনের উপড় । অদ্ভুত এক
অনুভুতি শরীর কে নাড়িয়ে দিল ।

No comments:

Post a Comment